পাসপোর্ট সংশোধনে নতুন আইন প্রজ্ঞাপন

পাসপোর্ট সংশোধনে নতুন নির্দেশনাঃ NID/BC অনুযায়ী

বিবিধ আইন

আমাদের দেশে জন্ম নিবন্ধন (BIRTH CERTIFICATE) থেকে শুরু করে জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) এবং পাসপোর্টে যে পরিমাণ নামের ভুল থাকে, সেটি পৃথিবীর আর কোন দেশে হয় কিনা আল্লাহ্‌ ভালো জানেন। এমন কোন পরিবার পাওয়া যাবে না, যাদের কোন একজনের জন্ম নিবন্ধন / জাতীয় পরিচয়পত্র / পাসপোর্টে নিজ নাম/ পিতার নাম/ মাতার নাম/ জন্ম তারিখের ভুল নেই। এমনকি আক্ষরিক ভাবে যদি দুই একটা পরিবার আপনি পেয়েও যান যাদের কোন জন্ম নিবন্ধন (BIRTH CERTIFICATE)/ জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)/ পাসপোর্টে নিজ নাম/ পিতার নাম/ মাতার নাম/ জন্ম তারিখের ভুল নেই, তাহলে আপনি যাচাই করে দেখবেন যে, বাংলা এবং ইংরেজি বানানে একটার সাথে অন্যটার সাদৃশ্য নেই। এত জন গুরুত্বপূর্ণ একটি জাতীয় কার্যক্রমে কে এত ভুল হয় এবং হলেও সেটি কি ইচ্ছাকৃত নাকি কারিগরি ত্রুটি, কারো যেন এই নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই। এসব সংশোধন করতে গিয়ে যে কত প্রকার হয়রানি এবং আর্থিক অপব্যয়, সেটি কেবল ভুক্তভোগীরাই টের পান। যাই হোক, যারা টেনশনে থাকেন যে, জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) এবং পাসপোর্টের মধ্যে তথ্যের গরমিল থাকলে, কোনটা ঠিক থাকবে কোনটা সংশোধন করতে হবে বা কোনটা দিয়ে কোন সংশোধন করতে হবে, তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি।

 

পাসপোর্টে প্রদত্ত তথ্য যদি ভুল হয়ে থাকে এবং সেটি সংশোধন করতে হয়, তবে এখন থেকে সেটি সংশোধন করতে হবে জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ ইং তারিখে একটি পরিপত্র প্রকাশ করে, যেখানে বলা হয়েছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশী নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) এবং পাসপোর্টের মধ্যে তথ্যের গরমিল (অর্থাৎ একটির সাথে অন্যটির যদি হুবহু মিল না থাকে) হলে, জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রদত্ত তথ্য (যেমন: নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, বয়স ইত্যাদি) অনুযায়ী পাসপোর্ট (PASSPORT) রি-ইস্যু করতে হবে। তবে, যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) নেই যেমন অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন (BIRTH CERTIFICATE) সনদ বিবেচনা করতে হবে। প্রয়োজনে তাদের জেএসসি বা জেডিসি বা এসএসসি বা দাখিল বা কারিগরি বা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় বা সম মানের যে কোন একটি সনদপত্র বিবেচনা করা যেতে পারে। সংশোধনের ক্ষেত্রে লিখিত আবেদন করতে হবে। আবেদন পত্রের সাথে অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট /সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট (PASSPORT) অফিসে প্রদর্শিত নমুনা অনুযায়ী আবেদনকারীকে একটি অঙ্গীকার নামা যথাযথা ভাবে পূরণ করে এবং স্বাক্ষর করে দাখিল করতে হবে।

 

যার/যাদের জাতীয় পত্র রয়েছে, তাদের অঙ্গীকার নামা হবে অনেকটা এই রকমঃ
অঙ্গীকার নামা

(পাসপোর্ট এর তথ্য পরিবর্তন/ সংশোধন সংক্রান্ত)

আমি………………, পিতাঃ………………, মাতাঃ………………, ঠিকানাঃ………………, পেশাঃ………………, ধর্মঃ………………, জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর……………… এ আবেদনের সময় আমার নিজ নাম/ পিতার নাম/ মাতার নাম/ জন্ম তারিখ ভুল লিপিবদ্ধ করা হইয়াছে। প্রকৃতপক্ষে আমার জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী আমার নিজ নাম/ পিতার নাম/ মাতার নাম/ জন্ম তারিখ এবং পাসপোর্টে উল্লিখিত নিজ নাম/ পিতার নাম/ মাতার নাম/ জন্ম তারিখ নিম্নরূপঃ

বর্তমান পাসপোর্টে প্রদর্শিত ভুল তথ্য জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী প্রকৃত তথ্য
নামঃ নামঃ
পিতার নামঃ পিতার নামঃ
মাতার নামঃ মাতার নামঃ
জন্ম তারিখঃ জন্ম তারিখঃ

 

উপর্যুক্ত অঙ্গীকারনামার যাবতীয় তথ্য সঠিক। ইহার কোন অংশ মিথ্যা নহে। আমি কোন তথ্য গোপন করি নাই। কোন মিথ্যা তথ্য দিয়া থাকিলে এই পরিবর্তন/ সংশোধন জনিত কারনে ভবিষ্যতে কোন প্রকার আইনগত জটিলতা হইলে আমি দায়ী থাকিব।

আমি স্বেচ্ছায় ও স্বজ্ঞানে উপর্যুক্ত অঙ্গীকারনামার যাবতীয় মর্ম সম্যক অবগত হইয়া স্বাক্ষর প্রদান করিলাম।

স্বাক্ষর

যার/যাদের জাতীয় পত্র নেই, জন্ম নিবন্ধন (BIRTH CERTIFICATE) রয়েছে; তাদের অঙ্গীকার নামা হবে অনেকটা এই রকমঃ
অঙ্গীকার নামা

(পাসপোর্ট এর তথ্য পরিবর্তন/ সংশোধন সংক্রান্ত)

আমি………………, পিতাঃ………………, মাতাঃ………………, ঠিকানাঃ………………, পেশাঃ………………, ধর্মঃ………………, জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী, জন্ম নিবন্ধন নম্বর………………, এ আবেদনের সময় আমার নিজ নাম/ পিতার নাম/ মাতার নাম/ জন্ম তারিখ ভুল লিপিবদ্ধ করা হইয়াছে। প্রকৃতপক্ষে আমার জন্ম সনদ অনুযায়ী আমার নিজ নাম/ পিতার নাম/ মাতার নাম/ জন্ম তারিখ এবং পাসপোর্টে উল্লিখিত নিজ নাম/ পিতার নাম/ মাতার নাম/ জন্ম তারিখ নিম্নরূপঃ

বর্তমান পাসপোর্টে প্রদর্শিত ভুল তথ্য জন্ম সনদ অনুযায়ী প্রকৃত তথ্য
নামঃ নামঃ
পিতার নামঃ পিতার নামঃ
মাতার নামঃ মাতার নামঃ
জন্ম তারিখঃ জন্ম তারিখঃ

 

উপর্যুক্ত অঙ্গীকারনামার যাবতীয় তথ্য সঠিক। ইহার কোন অংশ মিথ্যা নহে। আমি কোন তথ্য গোপন করি নাই। কোন মিথ্যা তথ্য দিয়া থাকিলে এই পরিবর্তন/ সংশোধন জনিত কারনে ভবিষ্যতে কোন প্রকার আইনগত জটিলতা হইলে আমি দায়ী থাকিব।

আমি স্বেচ্ছায় ও স্বজ্ঞানে উপর্যুক্ত অঙ্গীকারনামার যাবতীয় মর্ম সম্যক অবগত হইয়া স্বাক্ষর প্রদান করিলাম।

অভিভাবকের স্বাক্ষর

অনেক সময় আবার দেখা যায় যে, জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধনে যে, নাম রয়েছে, সেটিও ভুল; তখন আপনার উচিত হবে আগে জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধনের ভুল সংশোধন করিয়ে নেওয়া। এক্ষেত্রে অনেকেই আবার বলে যে, আমার জন্ম নিবন্ধনে যে ভুল ছিল সেটি অনুসারেই আমার জেএসসি বা জেডিসি বা এসএসসি বা দাখিল বা কারিগরি বা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় বা সম মানের যে কোন একটি সনদপত্র বা সার্টিফিকেটেও একই ভুল অনুসারে হয়ে গেছে, এখন করণীয় কি?

 

যদি আপনার জেএসসি বা জেডিসি বা এসএসসি বা দাখিল বা কারিগরি বা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় বা সম মানের যে কোন একটি সনদপত্র বা সার্টিফিকেটে ভুল থাকে তাহলে আপনি প্রথমে আপনার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করিয়ে নিবেন, তাহলে শিক্ষা বোর্ডে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপনি সংশোধন করাতে পারবেন। ভবিষ্যতে কোন একদিন সার্টিফিকেট সংশোধন করার প্রক্রিয়া নিয়ে লিখব, ইনশাআল্লাহ্‌। আজ আশা করি, পাসপোর্ট সংশোধন নিয়ে নতুন নির্দেশনাটি সহজ ভাষায় উপস্থাপন করতে পেরেছি, তারপরও বিস্তারিত জানতে নিম্নের লিংকে ক্লিক করে জানতে পারেন।

close

Subscribe

Subscribe to get an inbox of our latest blog.